মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি॥  পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় প্রতারণার মাধ্যমে ছেলেপক্ষের কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় মিমি আক্তার (২০) নামে এক নারী পুলিশ সদস্যকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। এ সময় মিমি আক্তারের বাবা আব্দুল মান্নান সিকদারকেও কারাগারে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল-ফয়সাল তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মিমি আক্তার ঢাকা মিল ব্যারাক পুলিশ লাইনে কর্মরত। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী জামাল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। কিন্তু আদালত মিমি ও তার বাবা মান্নান সিকদারের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। তবে মিমির মা খাদিজা বেগমের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, মঠবাড়িয়া উপজেলার বেতমোর গ্রামের নুরুল ইসলাম ফরাজীর ছেলে ফিরোজ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুর প্রবাসী। সিঙ্গাপুর থাকা অবস্থায় ফিরোজের বাবা-মা ছেলের বিয়ের জন্য পাত্রী দেখতে শুরু করেন। সেই সূত্রে, কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী গ্রামের আব্দুল মান্নান সিকদারের মেয়ে মিমি আক্তারকে পছন্দ করে উভয়পক্ষ পারিবারিকভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে।

পরে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে স্বর্ণালঙ্কার পরিয়ে তাদের অ্যাঙ্গেজমেন্ট সম্পন্ন হয়। তবে মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়ায় বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে বিয়ের রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হবে বলে কথা হয়। এরপর উভয় পরিবারের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। ছেলে-মেয়ের মধ্যে মোবাইলে যোগাযোগ হয়। মেয়েকে নতুন মোবাইল ফোন কিনে দেন বরপক্ষের পরিবার। মেয়ের পড়াশোনার খরচ ছেলে বহন করে। এছাড়া চাকরির কথা বলে ছেলের কাছ থেকে টাকা ও বিভিন্ন মালামালসহ সর্বমোট চার লাখের বেশি টাকা নেয় মেয়ে ও তার বাবা।

এ দিকে মিমির পুলিশে চাকরি হয়। ফিরোজ দেশে এসে বিয়ে করতে চাইলে বিয়ে করতে অস্বীকার করে মিমি। পরে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা ফেরত চাইলে তা দিতে অস্বীকার করে এবং মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় ফিরোজের বাবা নুরুল ইসলাম ফরাজী বাদী হয়ে মঠবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিমি ও তার মা-বাবাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর আদালত মঠবাড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।